হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেটঃ সিলেটে অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নয়টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। তবে আজ বুধবার (০৫ জুন) সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেও সিলেট জেলার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বুধবার দুপুর ১২টা সময় পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ২৬ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৫১ মিটার ওপরে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি ১৫ দশমিক ৫৮ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ১৮ মিটার ওপরে। একইভাবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি ৯ দশমিক ৮৮ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৪৩ মিটার ওপরে। তবে জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমেছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান মঙ্গলবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে ত্রাণ এবং বিশুদ্ধ পানি বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। এ ছাড়া বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ইউনিয়নভিত্তিক চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বন্যাদুর্গতদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ জায়গা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে জেলার জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার অনেক গ্রাম ও রাস্তাঘাট এখনো প্লাবিত। সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট নগরের উপশহর, সোবহানীঘাটসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ এখনো পানিবন্দী আছেন।
মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১০টি উপজেলার ৭৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩টি ওয়ার্ড বন্যাকবলিত হয়েছে। প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা ৮৩০। বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬২ মানুষ। জেলায় ৫৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ৪ হাজার ৫৫৭ জন।