দিরাই প্রতিনিধি::
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে সংখ্যা গরিষ্ঠ কৃষক জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে ৩ মাসব্যাপি ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সমাবেশের অংশ হিসেবে দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের চকবাজারে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৪ ঘটিকায় দিরাই উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক সালাহ উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দিরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবদাই মিয়, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুর রশিদ চৌধুরী, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক আতিকুর রহমান শিহাব।
সমাবেশ বক্তরা বলেন, জিয়াউর রহমান প্রাকৃতিক জলাধার সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা দেশে খাল খনন কর্মসূচি শুরু করেন। সমাজকে সংগঠিত করার এক অনন্য নজির হচ্ছে খাল খনন কর্মসূচি। আপাতদৃষ্টে এ কর্মসূচিকে শুধুই খাল খনন মনে করা হলেও এই কর্মসূচির বহুমুখী উদ্দেশ্য ছিল—কৃষিতে সেচ নিশ্চিত করা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। সারা দেশে খাল খনন করে প্রাকৃতিক জলাধার নির্মাণের কারণে ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে উপরিভাগের পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া খালগুলোতে মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সালের মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে দেড় হাজারের বেশি খাল খনন করা হয়। দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬ হাজার কিলোমিটার খাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খনন ও পুনঃখনন করা হয়। আর এ খাল খননের সরাসরি প্রভাব পড়েছিল কৃষিতে। এটা অপেক্ষাকৃত স্বল্পমূল্যের সেচসুবিধা ছিল কৃষকদের জন্য। ফলে অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যয় বহন করতে হয়নি কৃষকদের। শুধু সেচের আওতায় বৃদ্ধি নয়, গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচন ও খাদ্য সহায়তারও পথ খুলে দিয়েছিল খাল খনন কর্মসূচি। কার্যত খাল খনন কর্মসূচি একসঙ্গে অনেক সাফল্য অর্জনের একটি পরিকল্পিত কর্মসূচি ছিল। এর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী
জিয়ার শাসনামলে ১৯৮০-১৯৮১ অর্থবছরে ধান/চাল সংগ্রহ অভিযানে রেকর্ড পরিমাণ (১.০৩ মিলিয়ন টন) চাল সংগ্রহ করা হয় (শাহাব উদ্দিন ও ইসলাম, ১৯৯১)। তার শাসনামলেই ধানের বাম্পার ফলনের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রথম চাল রপ্তানি করা হয়। দেশের মানুষ তথা দরিদ্র গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে জিয়া বিশেষ কর্মপন্থা গ্রহণ করেন। শস্য সংগ্রহের সময় শস্যের দাম সাধারণত কম থাকে আবার একই শস্য কিছুদিন পর বেশি দামে কৃষককে কিনে খেতে হয়। কৃষক যেন শস্য সংগ্রহের সময় তার ফসল বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য তিনি ১৯৭৮ সালে শস্য গুদাম ঋণ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। আর এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হন।
কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক যেন সহজেই কৃষিকাজের জন্য ঋণ সুবিধা পান, সেজন্য তিনি ১৯৭৭ সালে ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ কৃষি ঋণ কর্মসূচি প্রণয়ন করেন, যা বাংলাদেশের কৃষি ঋণ প্রবাহে নতুনমাত্রা যোগ করে এবং দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
কৃষকদের সজাগদৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, সুনামগঞ্জ এক ফসলের এলাকা। এ এলাকার ফসল রক্ষার জন্য শতকোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার এলাকায় হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ হচ্ছে নিজ দায়িত্ব তা মনিটরিং করুন কোন দুর্নীতি হলে আমাদের জানান আমরা প্রশাসনের সাথে আলাপ করে কাজ আদায় করবো।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দিরাই পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ মোঃ সাব্বির মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক দলের সদস্য মানিক মিয়া তালুকদার, উপজেলা বিএনপির সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক একে কুদরত পাশা, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক সরদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাকিব মিয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমদ খান, রাজানগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি কালা মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান সরদার, সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির, প্রবাসী হুমায়ূন খান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুর ইসলাম জিবাতুল, জিষু দাস, করিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পংকজ কান্তি দাস, ইউনিয়ন কৃষকদরের সদস্য জাকেরিন আহমদ ভানু মিয়া, প্রমূখ