স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জ শহরের আনিসা হেলথ কেয়ারে সেবা নিতে আসা রোগীর অভিভাবক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার সাথে খারাপ আচরণ করায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির কলমের আঘাতে আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে আনিসা হেলথ কেয়ারে এই ঘটনা ঘটে। পরে আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সদর মডেল থানায় উভয় পক্ষের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের আনিসা ক্লিনিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রায়হান উদ্দিন তার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে রোগী দেখানোর সিরিয়ালে অনিয়ম নিয়ে ভাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পযার্য়ে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রায়হান উদ্দিন ও
দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি গোলাম রব্বানী সোহাগ (৩৫) আহত হন। পরে দু’জনকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
আহত রায়হান উদ্দিন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। সে শহরের কালীবাড়ি আবাসিক এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনোহর আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে নিজের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে আনিসা হেলথকেয়ার এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রায়হান উদ্দিন। আসার পর রোগীর সিরিয়েল অনুযায়ী স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে চাইলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গোলাম রব্বানী সোহাগের সাথে ভাগবিতন্ডা ঘটে।
আহত স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা রায়হান উদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জ আনিসা হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক কয়েকটি টেস্ট করানোর জন্য পরামর্শ দেন। টেস্ট করানোর জন্য আমার স্ত্রীকে নিয়ে আলট্রসনাগ্রাফির রুমের সামনে প্রায় ২ ঘন্টা যাবত অপেক্ষা করতে থাকি। এই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা ও সিরিয়াল আগে থাকার পরও আমার পর যারা টেস্টের সিরিয়াল নিয়েছিলো তারা টেস্ট করে রিপোর্ট নিয়ে যায়। কিন্তু আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করলেও আমার সিরিয়াল দেয়া হয়নি। সেই বিষয়ে আলট্রাসনোগ্রাফির দায়িত্বরত ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে সে প্রথমে উত্তেজিত হয় পরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে আক্রমণাত্মক হয়ে কলম দিয়ে আঘাত করে আমাকে। পরে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় তার কলমের আঘাতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।
আনিসায় সেবা নিতে আসা অভিভাবক সুজন মিয়া বলেন, একজন ডিউটিরত চিকিৎসক কিভাবে পুরুষ হয়ে মহিলার আলট্রাসনোগ্রাফি করে। ওটি ও করে এবং ছাড়পত্র ও দেয়। একটি হাসপাতালে ৩ জন ডাক্তার থাকা দরকার। কিন্তু এ আনিসা হেলথ কেয়ারে ১ জনেই করে সব। এই জন্য এক শুক্রবার এখানে সিজারে প্রসবিত এক মা মারা
যান। রোগীদের নিয়ে খামখেয়ালিপনা চলছে। অবৈধ টাকা উপার্জনের সিন্ডিকেট ফাঁদ এই আনিসা।
সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিন তার স্ত্রীকে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে আনিসা ক্লিনিকে যান। একটি বিষয় নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সম্প্রীতির শহর সুনামগঞ্জে এমন ঘটনায় সত্যি অবাক লাগছে।
ডাঃ সুজিত সরকার জানান, শুনেছি আনিসা ক্লিনিকে রোগীর সিরিয়াল নিয়ে ডাক্তার এবং স্বেচ্ছাসেবক দলনেতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়েই আহত হয়েছেন। আমার জানা মতে রায়হান উদ্দিন একজন ভাল মানুষ।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল কালাম বলেন, আনিসায় ঘটনার সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
২৩.০৭.২০২৫