সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের সাংহাই হাওরে ৩নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি(পিআইসি) কমিটিতে দুইজন সদস্য ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে জাল জালিয়াতি মাধ্যমে কমিটির অনুমোদন করে নিয়েছেন।
এমন অভিযোগ এনে গতকাল রবিবার (২২ ডিসেম্বর) উপজেলার জয়কলস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী এই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি প্রদানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর র ফসল রক্ষা বাধেঁর জন্য জয়কলস ইউপির সাংহাই হাওরে ৩নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির(পিআইসিতে) সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের কমিটির ৪নং সদস্য জামলাবাজ গ্রামের আজাদ মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক শাহীনুর আলম তুহিন(৩০) তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে,৫নং সদস্য একই গ্রামের মৃত বাতির আলীর ছেলে মোঃ মণির উদ্দিনকে শিক্ষক বানিয়ে গত ১১ ডিসেম্বর শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিব কর্তৃক স্বাক্ষর করে অুনমোদন নিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে শাহীনুর আলম তুহিন কোন মুক্তিযোদ্ধা নন তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন সিএনজি চালক,আর মোঃ মণির উদ্দিন শিক্ষন নন তবে একজন মুক্তিযোদ্ধা বলে জানা গেছে।
এছাড়াও কমিটির ৩নং সদস্য কিজির আহমদ বিগত স্বৈরাচারী সরকারের একজন দোসর এবং সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের অনুগত বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগের দোসররা একত্রিত হয়ে এই কমিটির অনুমোদন নিয়েছেন। এই কমিটি দ্রæত বাতিল করে নতুন কমিটি প্রদানের প্রস্তারনা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পিআইসি কমিটির ৪নং সদস্য শাহীনুর আলম তুহিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধা কিনা জানতে চাইলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন বলে জানান। তিনি একজন সিএনজির চালক কিন্তু কে বা কারা তার নামের সাথে মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি ব্যবহার করেছেন তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে কমিটির অপর ৫নং সদস্য মোঃ মণির উদ্দিন জানান তিনি কোন শিক্ষক নন তবে তিনি রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তবে কমিটিতে তার নামের সাথে শিক্ষক শব্দটি ব্যবহার করেছেন তিনি অবগত নন।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী জয়কলস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী জানান,এই কমিটির অধিকাংশ লোকজনই বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস সরকারের কর্মী। তারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ও ভূয়া শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে যে কমিটি অনুমোদন নিয়েছেন তারা লুটপাঠের জন্য কমিটির সভাপতি তার পছন্দের লোকজনকে কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করেছেন। তাছাড়া ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে প্রতারনার যেমন আশ্রয় নিয়েছেন তেমনি সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। অবিলম্বে এই ভূয়া কমিটি বাতিল করে নতুনভাবে যাচাই বাছাই করে কমিটি গঠনের দাবী জানান।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী( এসও) মোঃ মামুন মিয়া জানান স্ব স্ব এলাকার প্রতিটি কমিটিতে স্থানীয় বিভিন্ন পেশার লোকজনকে অর্ন্তভূক্ত করার বিধান রয়েছে। তবে এই কমিটিতে যারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং ভূয়া শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে কমিটির সদস্য হয়েছেন সেটা ইউএনও স্যারের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া জানান,অভিযোগ দেয়া হলে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমানিত হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুলেন্দু শেখর দাস
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
২৩.১২.২০২৪