1. ehiaahmedliton@gmail.com : Ehia Ahmed Liton : Ehia Ahmed Liton
  2. vatirkhantha@gmail.com : Vatir Khantha : Vatir Khantha
২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| হেমন্তকাল| মঙ্গলবার| দুপুর ২:৫৩|
শিরোনামঃ
না ফেরার দেশে ছাতকের তরুণ কণ্ঠশিল্পী আলী ইনসান ইয়াসীন খানের সমর্থনে জগন্নাথপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত দিরাই পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বিএনপিও সভাপতি জাহেদুর রহমানের মায়ের মৃত্যুতে আজমল চৌধুরীর শোক তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠামোর ৩১ দফা বাস্তবায়নে আব্দুল হাকিম সমর্থনে গণসমাবেশ দিরাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ ছাতক-দোয়ারাবাজারে ঘরে ঘরে ধানের শীষের দাওয়াত ছড়িয়ে দাও — কলিম উদ্দিন মিলন” দিরাই সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের অভিষেক ছাতকে সরিষাপাড়া যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থার কাউন্সিল সম্পন্ন মোঃ ছাদিক মিয়া সভাপতি, মোঃ মাছুম পারভেজ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত দিরাই-শাল্লায় ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদের জগন্নাথপুর শান্তিনগর বাজারে মাদকবিরোধী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

দর্জির কাজ করেও জিপিএ ৫ পেয়েছেন শাল্লার অর্পা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেটের সময় সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫,
  • 381 বার দেখা হয়েছে

শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::-

সুনামগঞ্জের শাল্লার প্রত্যন্ত এক গ্রামে, যেখানে বিদ্যুতের আলো ফোঁটা ফোঁটা আসে, আর ইন্টারনেটের সংকেত দুলে ওঠে বাতাসে—সেই অন্ধকারের মাঝেই আলো হয়ে জ্বলে উঠেছে একটি নাম অর্পা তালুকদার। ১৫ বছরের এই কিশোরী দর্জির কাজ করেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। তবে এই ফল শুধু একরাশ নম্বর নয়—এটি একটি ভাঙা সংসারের বুকচিরে এগিয়ে আসা সাহসী কন্যার বিজয়পত্র।

অর্পা তালুকদারের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে।২০১৬ সালে অর্পার বাবা মারা গেলেও হাল ছাড়েনি তার মা অলি তালুকদার। অর্পা তখন অনেক ছোট। এক নিমিষে পাল্টে যায় তার শৈশব। খাবারের প্লেট ফাঁকা, মায়ের চোখে ক্লান্তি, ছোট ভাইয়ের চোখে প্রশ্ন—এই দারিদ্র্যের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মেয়েটি একদিন চুপচাপ বলেছিল- ‘মা, আমি হারবো না। বই ছাড়বো না।’ সেদিন থেকে শুরু হয় অর্পার যুদ্ধ।

বয়স যখন খেলা করার, তখন অর্পা হাতে নেয় সেলাই মেশিন। শাড়ি-চাপানো ব্লাউজ সেলাই করে দিনে যে টাকা পেতো, সেই টাকা দিয়েই মেটায় খাতা-কলমের খরচ। রাত হলে ঘরের কোণে হারিকেন জ্বলে—আর অর্পা মুখ গুঁজে দেয় গণিত ও জীববিজ্ঞানে।

নিঃশব্দে অর্পা বলেন,বাবা মারা গিয়েছে সেই ২০১৬ সালেই। স্কুলে যেতাম খালি পেটে। কিন্তু পড়া ছাড়িনি। ক্লাস মিস করিনি। চোখে ভাসছে অশ্রু, তবু মুখে একরাশ অঙ্গীকার—‘আমি ডাক্তার হতে চাই। বাবার স্বপ্ন ছিল। এখন মায়ের জন্য চাই… একটা সুযোগ, শুধু একটা সুযোগ।’

তার শিক্ষক সজল চন্দ্র সরকার বলেন, অর্পার মতো ছাত্রী হাজারে এক। দারিদ্র্য তাকে আটকে রাখতে পারেনি। সে আমাদের স্কুলের গর্ব।

অর্পার প্রাইভেট টিউটর ও শান্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সীমান্ত তালুকদার সুমন বলেন, দর্জির কাজও করেছে নিজের পড়াশোনাও সামলিছে অর্পা। ওদের মতো পরিশ্রমীরা সুযোগ সুবিধা পেলে বিশ্বজয় করবে।  অর্পা গোল্ডেন A+ পাওয়ায় আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি৷ তার মত সংগ্রামী জীবন খুব কম মানুষের হয়৷ একটু সুযোগ সুবিধা পেলে বিশ্বজয় করবে অর্পা। তার একটা ছোট ভাই আছে যার নাম অর্ঘ্য । সে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। সেও অনেক মেধাবী। তিনি বলেন আমরা অর্পার পাশে সবসময় থাকবো।

অর্পর মা অলি রানী তালুকদার কাঁপা গলায় বলেন, রান্না ঘরে আজও কষ্ট, কিন্তু মেয়ের চোখে আলো। জানি না, কলেজে ভর্তি করাতে পারবো কিনা! অর্পার গল্প শুধু তার নিজের নয়—এটি এই দেশের হাজারো অবহেলিত, অব্যক্ত স্বপ্নের মুখ। যে স্বপ্ন এখনো থমকে আছে বৃত্তির অপেক্ষায়, একজোড়া বইয়ের অভাবে, অথবা কেবল একটি মানবিক হাতের ছোঁয়ায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন, দর্জির কাজ করে একটা মেয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে এটা খুবই আনন্দ ও গর্বের বিষয়। আমি তার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করছি। বিষয়টি যেহেতু আমার নলেজে দিয়েছেন, খোঁজখবর নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমরা তা করবো।

পাবেল আহমেদ

শাল্লা,সুনামগঞ্জ

মোবা-০১৭৬৬-১৭৩৭২০

সংবাদটি ভালো লাগলে আপনার টাইম লাইনে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2024 VK24