ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় হাটবাজার উন্নয়নের নামে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোটি টাকার ভিটা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ছাতক-সিলেট সড়ক সংলগ্ন সরকারি জমিতে প্রায় একশ’র বেশি ভিটা বন্দোবস্ত দেওয়ার নামে প্রতিটি ভিটার জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব রামপুর মৌজার ১নং সরকারি খতিয়ানভুক্ত (জে.এল. নং ২৪৬) ভূমিতে বন্দোবস্তের আগেই প্রায় এক মাস ধরে ভিটা নির্মাণের কাজ চলছে। নামমাত্র মূল্যে বন্দোবস্ত দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা রূপ নিচ্ছে এক প্রকার বাণিজ্যে। ফলে প্রায় দেড় কোটি টাকার বেশি অর্থ উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলের বিরুদ্ধে।
ভূমি বন্দোবস্তের বিষয়টি জানাজানি হতেই পার্শ্ববর্তী জমির বন্দোবস্ত নিয়েও দাবির ঝড় উঠেছে। এর জেরে ব্যবসায়ী জহির হোসেন কবরস্থান ও ঈদগাহের জন্য জমি দাবির কারণে চাঁদাবাজির মামলার শিকার হন। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার প্রতিবাদে গত ২১ অক্টোবর স্থানীয়রা গোবিন্দগঞ্জে মানববন্ধন করেন। অন্যদিকে, বিপরীত পক্ষ পাল্টা কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার ফলে এলাকায় উত্তেজনা ও সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, গত ৮ আগস্ট এক সভায় গোবিন্দগঞ্জ বাজারে নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে চারটি প্রকল্পে ১৪ লাখ টাকা এবং পরে আরও দুটি প্রকল্পে ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। মোট ২৪ লাখ টাকার সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে সিন্ডিকেট চক্র কোটি টাকার বেশি বাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গোবিন্দগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মিয়া বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত সভাপতি জানেন, আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “আমি সরকারি নীতিমালার বাইরে কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করিনি। নতুন এসিল্যান্ড দায়িত্ব গ্রহণের পর বিষয়টি দেখবেন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, “সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য শেড নির্মাণ করছে এবং এখান থেকে কেবল সরকারি নির্ধারিত অর্থই নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। দোকান বরাদ্দের নামে যদি কেউ টাকা লেনদেন করে থাকে, তাহলে তা খতিয়ে দেখা হবে।” এই বিষয়ে উপজেলা জুড়ে সমালোচনা শুরু হলে উনার ফেইসবুক পেইজ থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে বলেন, “গোবিন্দগঞ্জ বাজারের দোকানকোঠা বরাদ্দের জন্য কারো সাথে কোনো আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করা হলো। কেউ যদি কোনো রকম অর্থের কথা বলে, তাহলে প্রশাসনকে দ্রুত অবহিত করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।”